শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:০৫ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ কয়রায় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে বিতরণ করা ত্রাণের ৩ হাজার টাকা করে রাতে ফেরত নেয়া হয়েছে। দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিতরণ করে ফেরত নেয়া টাকা বেসরকারি সংস্থা উত্তরণের ম্যনেজার ও তার সহযোগীরা আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি জানতে পেরে উত্তরণ কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। এদিকে ত্রাণের টাকা আত্মসাতের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর কয়রায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণের জন্য বেসরকারি সংস্থা উত্তরণ কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি, মহারাজপুর ও কয়রা সদর ইউনিয়নে ৭৫০ পরিবারের তালিকা প্রস্তুত করে। প্রতিটি পরিবারে নগদ ৩ হাজার টাকাসহ একটি কিট বক্স বিতরণ করে সংস্থাটি।
উত্তরণের কয়রা শাখার ম্যানেজার মাসুদ ও তার সহযোগী গত মঙ্গলবার দিনে এসব ত্রাণ বিতরণ করেন। রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রাহকদের আগামীতে ১২ হাজার টাকা দেবেন এ প্রতিশ্রুতিতে ৩ হাজার টাকা ফেরত নেন।
কালনা গ্রামের বাসিন্দা সালেহা খাতুন, নুরজাহান, আসমা, মহারাজপুর গ্রামের রুবেল, জামাল গাজী বলেন, মঙ্গলবার বিকালে টাকা দিয়ে সন্ধ্যার পর আবার ঘরে ঘরে এসে ম্যানেজার মাসুদ ও বাসার ৩ হাজার টাকা ফেরত নিয়ে যান। এ সময় মাসুদ ও বাশার জানান ওই টাকা ফেরত দিলে কিছুদিন পর ১২ হাজার দেয়া হবে।
উত্তরণের কয়রার ম্যানেজার মাসুদ আহসান জানান, ১৪-১৫ জুন কয়রা সদর ইউনিয়ন ও ১৬-১৭ জুন মহারাজপুর ইউনিয়নে ৪৮৬ পরিবারে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নে ১৮ জুন বৃহস্পতিবার ত্রাণ বিতরণের কথা ছিল। কিন্তু হেড অফিস ত্রাণ বিতরণ বন্ধ করে দিয়েছে। মঙ্গলবার মহারাজপুর ইউনিয়নের কালনা, মহারাজপুর, দশালিয়া, মঠবাড়ী, আটরা, শ্রীরামপুরসহ একাধিক গ্রামে ২৫০ পরিবারে ৩ হাজার টাকা করে ও একটি করে কিট বক্স বিতরণ করা হয়।
ম্যানেজার মাসুদ আহসান বলেন, তিনি ঘরে ঘরে গিয়ে অর্থ আনার সঙ্গে জড়িত নন। বাসার আরো কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে এ কাজ করেছে বলে শুনেছেন। ঘটনাটি জানার পর প্রধান কার্যালয় থেকে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। একই সঙ্গে ত্রাণ বিতরণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
উত্তরণের সহকারী সমন্বয়কারী (প্রশাসন) শম্ভু চৌধুরি জানান, এ ধরনের অভিযোগ জানার পর গত বুধবার তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির জানান, তার ইউনিয়নে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি করেছে উত্তরণের ম্যানেজার মাসুদ। এছাড়া তারা নিজেরাই তালিকা করে একই পরিবারের স্বামী, স্ত্রীসহ সন্তানদেরও নামে তালিকা করে ত্রাণ দিয়েছেন।
Leave a Reply